০৪:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

দুর্ঘটনা রোধে রাস্তার বিভাজকগুলিতে ম্যানেকুইন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ১১২৭ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

রাজধানীর দিয়াবাড়ীর সিনিরটেক ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে বেড়িবাঁধ ধরে তুরাগের ধুর অভিমুখে যাওয়ার জন্য একশ গজ পর্যন্ত সড়কে ডিভাইডার রয়েছে। সড়কটি ঢালু হওয়ায় উত্তরা দিক থেকে আসা যানবাহনের চালকদের কাছে ডিভাইডার ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর তা ঠেকাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তিন শ্রমিক।

 ডিভাইডারের কাছে চায়ের দোকান আছে। চা-দোকানদার শামীম মিয়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে চা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এক মাসে ওই স্থানে ১০ থেকে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটে। দারুস সালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ডিভাইডার ঠিকমতো দেখা না যাওয়ায় প্রায়ই ওই স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে।

এমন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা রোধে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা নেন তিন শ্রমিক। যেখানে রাস্তার বিভাজক শেষ হয়েছে সেখানে তারা একটি পুস্তক স্থাপন করেছে। ম্যানকুইনটি কমিউনিটি পুলিশদের পোশাকের স্টাইলে পরিহিত। ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, গত ২০ দিনে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখাইরুল ইসলাম বলেন, ম্যানেকুইন গাইড হিসেবে কাজ করছে।

তিনি 20 টাকায় পুস্তকটি কিনেছিলেন

তিন শ্রমিকের নাম মো. বাবুল, মোঃ শামসু ও মোঃ মানিক তারা সিন্নিরটেকের পাশে একটি ঝুট গুদামে কাজ করেন। গত বুধবার বিকেলে সিনিরটেকের বাবুলের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

বাবুলBD OPEN NEWS

বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে বালুবাহী একটি ট্রাক রোড ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উত্তর দিক থেকে আসা ট্রাকটি রাস্তার ডিভাইডারের ওপর দিয়ে চলে যায়। চায়ের দোকানে বসে শামসু ও মানিকের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন তিনি। তখন তিনি দেখতে পেলেন একজন লোক একটি পুস্তক বহন করছে, যে বাঙ্গারি থেকে পণ্য সংগ্রহ করেছে।

বাবুল বলেন, সেটা দেখে মনে আসে কমিউনিটি পুলিশের মতো পোশাক পরে ডিভাইডারের শেষ প্রান্তে রাখলে হয়তো আর দুর্ঘটনা ঘটবে না। তারপর 20 টাকায় পুস্তকটি কেনা হয়। তারপর ঝুটের গুদাম থেকে কাপড় পাওয়া যায়।

মিয়ার চায়ের দোকানে বসে বাবুলের সঙ্গে কথা বলছিল শামীম। শামীম বলেন, এখানে দুর্ঘটনার শিকার ট্রাক ও মোটরসাইকেল। এক মাসে ১০ থেকে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটে। বাঁশ এবং কাঠ একটি বিভাজকের অস্তিত্ব বোঝাতে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি।

শামীম বলেন, ম্যানেকুইন বসানোর পর আর দুর্ঘটনা ঘটছে না। এটা দেখেই গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডিভাইডারও আছে বলে বুঝতে পারছেন চালকরা।

দারুস সালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলামও একই কথা জানান। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, কে বা কারা এই নথি বসিয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এটি স্থাপনের পর তিনি কোনো দুর্ঘটনার খবর পাননি।

স্থায়ী সমাধান কি?

এই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সিনিরটেক মোড় থেকে ধুর পর্যন্ত রাস্তাটি একটু খাড়া। উল্টো দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোকে হঠাৎ করে চড়াই হতে হয়। সড়ক বিভাজকের কিছু অংশ রয়েছে। এই সড়কে নিয়মিত চলাচল না করা চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। ইফতেখায়রুল বলেন, এ সমস্যার কথা সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পুরো সড়কটি সংস্কার করা হবে।

তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি BD OPEN NEWS

বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে যোগাযোগের বিষয়ে তিনি অবগত নন। তিনি আরও বলেন, সড়কটি সড়ক ও গণসড়ক (সওজ) বিভাগের। তারপরও পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইলে তারা চেষ্টা করবেন বলে জানান ঢাকা উত্তর সিটির এই কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দুর্ঘটনা রোধে রাস্তার বিভাজকগুলিতে ম্যানেকুইন

আপডেট সময় ০৯:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাজধানীর দিয়াবাড়ীর সিনিরটেক ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে বেড়িবাঁধ ধরে তুরাগের ধুর অভিমুখে যাওয়ার জন্য একশ গজ পর্যন্ত সড়কে ডিভাইডার রয়েছে। সড়কটি ঢালু হওয়ায় উত্তরা দিক থেকে আসা যানবাহনের চালকদের কাছে ডিভাইডার ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর তা ঠেকাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তিন শ্রমিক।

 ডিভাইডারের কাছে চায়ের দোকান আছে। চা-দোকানদার শামীম মিয়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে চা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এক মাসে ওই স্থানে ১০ থেকে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটে। দারুস সালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ডিভাইডার ঠিকমতো দেখা না যাওয়ায় প্রায়ই ওই স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে।

এমন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা রোধে ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা নেন তিন শ্রমিক। যেখানে রাস্তার বিভাজক শেষ হয়েছে সেখানে তারা একটি পুস্তক স্থাপন করেছে। ম্যানকুইনটি কমিউনিটি পুলিশদের পোশাকের স্টাইলে পরিহিত। ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, গত ২০ দিনে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখাইরুল ইসলাম বলেন, ম্যানেকুইন গাইড হিসেবে কাজ করছে।

তিনি 20 টাকায় পুস্তকটি কিনেছিলেন

তিন শ্রমিকের নাম মো. বাবুল, মোঃ শামসু ও মোঃ মানিক তারা সিন্নিরটেকের পাশে একটি ঝুট গুদামে কাজ করেন। গত বুধবার বিকেলে সিনিরটেকের বাবুলের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

বাবুলBD OPEN NEWS

বলেন, প্রায় ২০ দিন আগে বালুবাহী একটি ট্রাক রোড ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উত্তর দিক থেকে আসা ট্রাকটি রাস্তার ডিভাইডারের ওপর দিয়ে চলে যায়। চায়ের দোকানে বসে শামসু ও মানিকের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন তিনি। তখন তিনি দেখতে পেলেন একজন লোক একটি পুস্তক বহন করছে, যে বাঙ্গারি থেকে পণ্য সংগ্রহ করেছে।

বাবুল বলেন, সেটা দেখে মনে আসে কমিউনিটি পুলিশের মতো পোশাক পরে ডিভাইডারের শেষ প্রান্তে রাখলে হয়তো আর দুর্ঘটনা ঘটবে না। তারপর 20 টাকায় পুস্তকটি কেনা হয়। তারপর ঝুটের গুদাম থেকে কাপড় পাওয়া যায়।

মিয়ার চায়ের দোকানে বসে বাবুলের সঙ্গে কথা বলছিল শামীম। শামীম বলেন, এখানে দুর্ঘটনার শিকার ট্রাক ও মোটরসাইকেল। এক মাসে ১০ থেকে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটে। বাঁশ এবং কাঠ একটি বিভাজকের অস্তিত্ব বোঝাতে স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি।

শামীম বলেন, ম্যানেকুইন বসানোর পর আর দুর্ঘটনা ঘটছে না। এটা দেখেই গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডিভাইডারও আছে বলে বুঝতে পারছেন চালকরা।

দারুস সালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলামও একই কথা জানান। তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, কে বা কারা এই নথি বসিয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এটি স্থাপনের পর তিনি কোনো দুর্ঘটনার খবর পাননি।

স্থায়ী সমাধান কি?

এই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সিনিরটেক মোড় থেকে ধুর পর্যন্ত রাস্তাটি একটু খাড়া। উল্টো দিক থেকে আসা যানবাহনগুলোকে হঠাৎ করে চড়াই হতে হয়। সড়ক বিভাজকের কিছু অংশ রয়েছে। এই সড়কে নিয়মিত চলাচল না করা চালকরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন। ইফতেখায়রুল বলেন, এ সমস্যার কথা সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে পুরো সড়কটি সংস্কার করা হবে।

তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি BD OPEN NEWS

বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে যোগাযোগের বিষয়ে তিনি অবগত নন। তিনি আরও বলেন, সড়কটি সড়ক ও গণসড়ক (সওজ) বিভাগের। তারপরও পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইলে তারা চেষ্টা করবেন বলে জানান ঢাকা উত্তর সিটির এই কর্মকর্তা।