১১:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

আট মাস পেরিয়ে গেলেও ৪১ তম লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১৬:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
  • / ৯২৮ বার পড়া হয়েছে

আট মাস পেরিয়ে গেলেও ৪১ তম লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের অপেক্ষার শেষ নেই।

  • লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে মূলত বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীর কারণে।
  • লিখিত পরীক্ষায় ২১ হাজার ৫৬ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে, যা গত কয়েকটি বিসিএসের প্রায় দ্বিগুণ।

২৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তারপর থেকে এক বছর আট মাস কেটে গেছে। লিখিত পরীক্ষার ফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফল কবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বিডি ওপেন নিজিউকে বলেন, তারা লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরপর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। অনিশ্চয়তার কারণে তারা মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিকমতো দিতে পারছে না।

তবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, তারা সব পরীক্ষার ফল দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করে। ৪১তম বিসিএসেও তাদের সেই প্রচেষ্টা রয়েছে। এই বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের কারণে রিপোর্ট কার্ড দেখতে একটু বেশি সময় লাগে। আগামী মাসের কোনো এক সময় ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।

এই বিসিএস বাধ্যতামূলক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা গত বছরের ২৯ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ৭ ডিসেম্বর।

একজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘দেড় বছর আগে আমরা ৪১তম বিসিএসে আবেদন করেছিলাম। লিখিত পরীক্ষার ফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলাফল ঘোষণার পর মৌখিক পরীক্ষা। পিএসসি নিতে অনেক সময় লাগবে। তারপর আবার চূড়ান্ত ফলাফল। সেখানেও সময় কেটে যাবে। সব মিলিয়ে একটা বিসিএসে এত সময় লাগলে আমাদের হতাশা বাড়তে থাকে।

ক্রমবর্ধমান বয়সের কথা উল্লেখ করে অন্য একজন প্রার্থী বলেন, “প্রত্যেকেরই প্রত্যাশা থাকে।” বেশি বয়সে কর্মীবাহিনীতে যোগদান সেই প্রত্যাশাকে অনেকটাই কমিয়ে দেয়। আশা করি পিএসসি শীঘ্রই এই বিসিএস কার্যক্রম শেষ করবে।

পিএসসির একাধিক সূত্র জানায়, ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্বের অন্যতম কারণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ২১ হাজার ৫৬ জন। আগের বিসিএসের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। এত প্রার্থীর রেকর্ড দেখতে অনেক সময় লাগে।

৩৬তম বিএসসিতে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২ হাজার ৪৬৮ জন। ৩৭তম বিসিএসে ৮ হাজার ৫২৩ জন। ৩৮তম ও ৪০তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষা দেন যথাক্রমে ৯ হাজার ৮৬২ ও ১০ হাজার ৯৬৪ জন। ৩৯তম বিসিএস ছিল চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ।

পিএসসি সূত্র বলছে, কিছু পরীক্ষার্থী সময়মতো খাতা জমা দেন না। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষার বেশ কিছু প্রশ্নপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে। এর জন্যও সময় বেশি লাগে।

পিএসসির একজন সদস্য দাবি করেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬ মাসে ১০০টির মধ্যে মাত্র ১৫টি অ্যাকাউন্ট দেখেছেন। কিন্তু তারপরও অনেক পরীক্ষার্থী সময়মতো খাতা দেন না। কিন্তু এখন এ বিষয়ে কঠোর হচ্ছে পিএসসি। যদি একজন পরীক্ষক অ্যাকাউন্ট দেখতে খুব বেশি সময় নেয়, তাহলে তাকে ভবিষ্যতে কোনো PSC অ্যাকাউন্ট দেখতে দেওয়া হবে না।

পিএসসির ওয়েবসাইট পরিদর্শন করে দেখা গেছে যে সার্কুলার প্রকাশের তারিখ থেকে ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে ৩ বছর ১১ মাস, ৩৮তম বিসিএসের জন্য ৩ বছর ৭ মাস এবং ৩ বছর ৮ মাস সময় লেগেছে। ৩৭তম বিসিএসের জন্য।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বিডি ওপেন নিউজকে বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে ফলাফল দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ছুটির দিনেও কাজ করছে পিএসসি। আশা করছি, আগামী মাসেই ফল প্রকাশ করতে পারব।

৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ১৯ মার্চ ২০২০ এ অনুষ্ঠিত হয়। পিএসসি গত আগস্টের শুরুতে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই বিসিএসে বিভিন্ন পদে ২ হাজার ১৩৫ জন কর্মকর্তা নিয়োগের কথা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। এই ক্যাডারে ৯১৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস শিক্ষায় ৯০৫ জন প্রভাষক এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগে ১০ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষার পর প্রশাসন ক্যাডারে আরও নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রশাসনে ৩২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আট মাস পেরিয়ে গেলেও ৪১ তম লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়নি

আপডেট সময় ০৪:১৬:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকে দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। প্রার্থীদের অপেক্ষার শেষ নেই।

  • লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে মূলত বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীর কারণে।
  • লিখিত পরীক্ষায় ২১ হাজার ৫৬ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে, যা গত কয়েকটি বিসিএসের প্রায় দ্বিগুণ।

২৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তারপর থেকে এক বছর আট মাস কেটে গেছে। লিখিত পরীক্ষার ফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফল কবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বিডি ওপেন নিজিউকে বলেন, তারা লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরপর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। অনিশ্চয়তার কারণে তারা মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিকমতো দিতে পারছে না।

তবে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, তারা সব পরীক্ষার ফল দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করে। ৪১তম বিসিএসেও তাদের সেই প্রচেষ্টা রয়েছে। এই বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণের কারণে রিপোর্ট কার্ড দেখতে একটু বেশি সময় লাগে। আগামী মাসের কোনো এক সময় ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে।

এই বিসিএস বাধ্যতামূলক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা গত বছরের ২৯ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ৭ ডিসেম্বর।

একজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘দেড় বছর আগে আমরা ৪১তম বিসিএসে আবেদন করেছিলাম। লিখিত পরীক্ষার ফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলাফল ঘোষণার পর মৌখিক পরীক্ষা। পিএসসি নিতে অনেক সময় লাগবে। তারপর আবার চূড়ান্ত ফলাফল। সেখানেও সময় কেটে যাবে। সব মিলিয়ে একটা বিসিএসে এত সময় লাগলে আমাদের হতাশা বাড়তে থাকে।

ক্রমবর্ধমান বয়সের কথা উল্লেখ করে অন্য একজন প্রার্থী বলেন, “প্রত্যেকেরই প্রত্যাশা থাকে।” বেশি বয়সে কর্মীবাহিনীতে যোগদান সেই প্রত্যাশাকে অনেকটাই কমিয়ে দেয়। আশা করি পিএসসি শীঘ্রই এই বিসিএস কার্যক্রম শেষ করবে।

পিএসসির একাধিক সূত্র জানায়, ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে বিলম্বের অন্যতম কারণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ২১ হাজার ৫৬ জন। আগের বিসিএসের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। এত প্রার্থীর রেকর্ড দেখতে অনেক সময় লাগে।

৩৬তম বিএসসিতে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২ হাজার ৪৬৮ জন। ৩৭তম বিসিএসে ৮ হাজার ৫২৩ জন। ৩৮তম ও ৪০তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষা দেন যথাক্রমে ৯ হাজার ৮৬২ ও ১০ হাজার ৯৬৪ জন। ৩৯তম বিসিএস ছিল চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ।

পিএসসি সূত্র বলছে, কিছু পরীক্ষার্থী সময়মতো খাতা জমা দেন না। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষার বেশ কিছু প্রশ্নপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে। এর জন্যও সময় বেশি লাগে।

পিএসসির একজন সদস্য দাবি করেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৬ মাসে ১০০টির মধ্যে মাত্র ১৫টি অ্যাকাউন্ট দেখেছেন। কিন্তু তারপরও অনেক পরীক্ষার্থী সময়মতো খাতা দেন না। কিন্তু এখন এ বিষয়ে কঠোর হচ্ছে পিএসসি। যদি একজন পরীক্ষক অ্যাকাউন্ট দেখতে খুব বেশি সময় নেয়, তাহলে তাকে ভবিষ্যতে কোনো PSC অ্যাকাউন্ট দেখতে দেওয়া হবে না।

পিএসসির ওয়েবসাইট পরিদর্শন করে দেখা গেছে যে সার্কুলার প্রকাশের তারিখ থেকে ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে ৩ বছর ১১ মাস, ৩৮তম বিসিএসের জন্য ৩ বছর ৭ মাস এবং ৩ বছর ৮ মাস সময় লেগেছে। ৩৭তম বিসিএসের জন্য।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বিডি ওপেন নিউজকে বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে ফলাফল দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ছুটির দিনেও কাজ করছে পিএসসি। আশা করছি, আগামী মাসেই ফল প্রকাশ করতে পারব।

৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ১৯ মার্চ ২০২০ এ অনুষ্ঠিত হয়। পিএসসি গত আগস্টের শুরুতে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই বিসিএসে বিভিন্ন পদে ২ হাজার ১৩৫ জন কর্মকর্তা নিয়োগের কথা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। এই ক্যাডারে ৯১৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস শিক্ষায় ৯০৫ জন প্রভাষক এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগে ১০ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষার পর প্রশাসন ক্যাডারে আরও নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রশাসনে ৩২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।