Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/bdopenne/public_html/wp-content/themes/newsflashpro/inc/template-functions.php on line 458
বিএনপির ভোট ভাগাভাগির কারণে মনিরুল হেরে যান-BD Open News
০৬:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

বিএনপির ভোট ভাগাভাগির কারণে মনিরুল হেরে যান

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
  • / ১৬৩৯ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

বিএনপি তার পক্ষে সব ভোট জিততে না পারায় এবার মেয়র পদ হারাতে হয়েছে মনিরুল হককে। অপরদিকে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হকের বিজয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সব নির্বাচনের পর প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নিয়ে নানান ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে, কুমিল্লার ভোট নিয়েও তাই হচ্ছে। তবে মূল আলোচনা এখন জয়-পরাজয়ের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণসহ ভোটের ফল ঘোষণার নাটকীয় শেষ মুহূর্তের নাটক ঘিরে। এছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে আলোচনা।

মাত্র ৩৪৩ ভোটে কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে জয়-পরাজয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নৌকা প্রতীকে আরফানুল হক (রিফাত) পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক (সাক্কু) পেয়েছেন ৪৯,০৯৮ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয় স্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন পেয়েছেন ২৯,০৯৯ ভোট। মনিরুল ও নিজাম উভয়েই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দুজনই পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৬৬ ভোট। দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও তাদের ভোটের মূল উৎস ছিল বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, দুইবারের মেয়র মনিরুল বিএনপির সাধারণ সমর্থকদের ভোটে জয়ী হতে পারলেও সাংগঠনিক কাঠামোতে নেতা-কর্মীদের ভোট পাননি। এ কারণে নিজামউদ্দিন বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত এলাকায় তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটও পেয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা শহরের শাকতলা, পদুয়ার বাজার, সিটি কলেজ, তাজপাড়া, নেউড়া, বল্লভপুর, ছাউয়ারা, তেলিকোনা ও ইসলামপুর এলাকা উল্লেখযোগ্য।

কুমিল্লার ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহসানুল কবির প্রথম আলো</em>কে বলেন, ‘সাক্কু (মনিরুল হক) ওয়ান ম্যান আর্মি। তিনি নীরব ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি বড় দল। এই দলের বেশির ভাগই কায়সারের (নিজাম উদ্দিন) পক্ষে কাজ করেছে।

কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা আগে থেকেই ছিল, এবার নিজামের প্রার্থিতার পেছনে স্থানীয় বিএনপিরও ‘রাজনীতি’ রয়েছে। এবার মনিরুলকে ঠেকাতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিনের সঙ্গে গোপন ‘সমঝোতা’ করেছিলেন দলের একাংশ। মনিরুল হক অতীতে যা করেছেন। এ চুক্তিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াসিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম তার শ্যালক। স্থানীয়ভাবে দলীয় রাজনীতিতে তার অবস্থান রয়েছে, কুমিল্লায় কারখানাও রয়েছে। সেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এই বিষয়গুলো ভোটেও নিজামের জন্য সহায়ক হয়েছে।

স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দল বলছে, মেয়র নির্বাচনে পরাজয় মনিরুল হককে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অবস্থায় ফেলতে পারে। ফলে জেলা বিএনপিতে দলাদলি ও কোন্দল বাড়তে পারে। তবে জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মনিরুল হক বিএনপির বাইরের মানুষের কাছ থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন। দলীয় প্রতীক ছাড়া নৌকা প্রতীকের বিপরীতে মাত্র ৩৪৩ ভোটে হেরেছে ক্ষমতাসীন দল। দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এত বেশি ভোট পেয়েছেন এটাই তার জনভিত্তির প্রমাণ বলে মনে করেন অনেকে।

অন্যদিকে আরফানুল হকের জয় ছিল চমক। আরফানুল মনিরুলকে পরাজিত করেছেন, যিনি প্রভাবশালী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল খান (বর্তমানে মৃত) ২৯,০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন এবং তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা (বর্তমানে একজন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি) ১১,০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে গত মেয়র নির্বাচনে আরফানুলের চেয়ে সাড়ে সাত হাজার ভোট বেশি পেয়েও মনিরুলের কাছে হেরে যান আনজুম সুলতানা।

আরফানুলের এই জয়কে এমপি বাহাউদ্দিন বাহারের বিজয় বলতে চান আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতারা। এর প্রমাণ পাওয়া যায়, বুধবার রাতে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে ফলাফল ঘোষণার পর নগরী ‘নৌকা নওকা’ ও ‘বাহার ভাই, বাহার ভাই’ স্লোগান দিতে থাকে।

আরফানুল হকও নিজের জয়ে বাহাউদ্দিনের ভূমিকার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, একিউএম বাহাউদ্দিনের নেতৃত্বে দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং কুমিল্লার মানুষের ভালোবাসায় আমি বিজয়ী হয়েছি।

এই বিজয় কুমিল্লার রাজনীতিতে বাহাউদ্দিনের প্রভাবকে আরও দুর্বল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

45 মিনিটের নাটক

ফল ঘোষণা শেষে ৪৫ মিনিটের নাটক নিয়ে কুমিল্লায় চলছে তুমুল আলোচনা। বুধবার বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর রাত ৮টার মধ্যে ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭২টির ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত আরফানুলের ভোট ছিল ৩৩ হাজার ৭৯৩টি। মনিরুলের ভোট ছিল ৩২ হাজার ৩২২। এ সময় আরফানুল ১ হাজার ৪৬১ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

উত্তেজনার এ সময় নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল জানতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে (যেখান থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল) আসেন মনিরুল হক। রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী মাইকে ঘোষণা করেন, ১০১টি কেন্দ্রের ফল এসেছে। যাইহোক, তারপর থেকে

নিউজটি শেয়ার করুন

বিএনপির ভোট ভাগাভাগির কারণে মনিরুল হেরে যান

আপডেট সময় ০৪:১৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

বিএনপি তার পক্ষে সব ভোট জিততে না পারায় এবার মেয়র পদ হারাতে হয়েছে মনিরুল হককে। অপরদিকে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হকের বিজয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সব নির্বাচনের পর প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নিয়ে নানান ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে, কুমিল্লার ভোট নিয়েও তাই হচ্ছে। তবে মূল আলোচনা এখন জয়-পরাজয়ের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণসহ ভোটের ফল ঘোষণার নাটকীয় শেষ মুহূর্তের নাটক ঘিরে। এছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে আলোচনা।

মাত্র ৩৪৩ ভোটে কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে জয়-পরাজয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নৌকা প্রতীকে আরফানুল হক (রিফাত) পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনিরুল হক (সাক্কু) পেয়েছেন ৪৯,০৯৮ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয় স্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন পেয়েছেন ২৯,০৯৯ ভোট। মনিরুল ও নিজাম উভয়েই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দুজনই পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৬৬ ভোট। দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও তাদের ভোটের মূল উৎস ছিল বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, দুইবারের মেয়র মনিরুল বিএনপির সাধারণ সমর্থকদের ভোটে জয়ী হতে পারলেও সাংগঠনিক কাঠামোতে নেতা-কর্মীদের ভোট পাননি। এ কারণে নিজামউদ্দিন বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত এলাকায় তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোটও পেয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা শহরের শাকতলা, পদুয়ার বাজার, সিটি কলেজ, তাজপাড়া, নেউড়া, বল্লভপুর, ছাউয়ারা, তেলিকোনা ও ইসলামপুর এলাকা উল্লেখযোগ্য।

কুমিল্লার ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহসানুল কবির প্রথম আলো</em>কে বলেন, ‘সাক্কু (মনিরুল হক) ওয়ান ম্যান আর্মি। তিনি নীরব ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি বড় দল। এই দলের বেশির ভাগই কায়সারের (নিজাম উদ্দিন) পক্ষে কাজ করেছে।

কুমিল্লার রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা আগে থেকেই ছিল, এবার নিজামের প্রার্থিতার পেছনে স্থানীয় বিএনপিরও ‘রাজনীতি’ রয়েছে। এবার মনিরুলকে ঠেকাতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিনের সঙ্গে গোপন ‘সমঝোতা’ করেছিলেন দলের একাংশ। মনিরুল হক অতীতে যা করেছেন। এ চুক্তিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াসিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম তার শ্যালক। স্থানীয়ভাবে দলীয় রাজনীতিতে তার অবস্থান রয়েছে, কুমিল্লায় কারখানাও রয়েছে। সেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এই বিষয়গুলো ভোটেও নিজামের জন্য সহায়ক হয়েছে।

স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দল বলছে, মেয়র নির্বাচনে পরাজয় মনিরুল হককে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা অবস্থায় ফেলতে পারে। ফলে জেলা বিএনপিতে দলাদলি ও কোন্দল বাড়তে পারে। তবে জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মনিরুল হক বিএনপির বাইরের মানুষের কাছ থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন। দলীয় প্রতীক ছাড়া নৌকা প্রতীকের বিপরীতে মাত্র ৩৪৩ ভোটে হেরেছে ক্ষমতাসীন দল। দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার নানা অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এত বেশি ভোট পেয়েছেন এটাই তার জনভিত্তির প্রমাণ বলে মনে করেন অনেকে।

অন্যদিকে আরফানুল হকের জয় ছিল চমক। আরফানুল মনিরুলকে পরাজিত করেছেন, যিনি প্রভাবশালী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল খান (বর্তমানে মৃত) ২৯,০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন এবং তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা (বর্তমানে একজন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি) ১১,০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে গত মেয়র নির্বাচনে আরফানুলের চেয়ে সাড়ে সাত হাজার ভোট বেশি পেয়েও মনিরুলের কাছে হেরে যান আনজুম সুলতানা।

আরফানুলের এই জয়কে এমপি বাহাউদ্দিন বাহারের বিজয় বলতে চান আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতারা। এর প্রমাণ পাওয়া যায়, বুধবার রাতে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে ফলাফল ঘোষণার পর নগরী ‘নৌকা নওকা’ ও ‘বাহার ভাই, বাহার ভাই’ স্লোগান দিতে থাকে।

আরফানুল হকও নিজের জয়ে বাহাউদ্দিনের ভূমিকার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, একিউএম বাহাউদ্দিনের নেতৃত্বে দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং কুমিল্লার মানুষের ভালোবাসায় আমি বিজয়ী হয়েছি।

এই বিজয় কুমিল্লার রাজনীতিতে বাহাউদ্দিনের প্রভাবকে আরও দুর্বল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

45 মিনিটের নাটক

ফল ঘোষণা শেষে ৪৫ মিনিটের নাটক নিয়ে কুমিল্লায় চলছে তুমুল আলোচনা। বুধবার বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর রাত ৮টার মধ্যে ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭২টির ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ পর্যন্ত আরফানুলের ভোট ছিল ৩৩ হাজার ৭৯৩টি। মনিরুলের ভোট ছিল ৩২ হাজার ৩২২। এ সময় আরফানুল ১ হাজার ৪৬১ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

উত্তেজনার এ সময় নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল জানতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে (যেখান থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল) আসেন মনিরুল হক। রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী মাইকে ঘোষণা করেন, ১০১টি কেন্দ্রের ফল এসেছে। যাইহোক, তারপর থেকে