তিনটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করার চেষ্টা করছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের আহার রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে জেলা এবি পার্টি আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে, জোর করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। একদিন না একদিন এর করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়। আমরা দেখছি, তিনটি রাজনৈতিক দলকে সরকার খুশি করার চেষ্টা করছে। তাদের চাপে সরকার দিশাহারা। অথচ অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো এমন ছিল যে সরকারের চাপে রাজনৈতিক দলগুলো দিশাহারা হতো।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানের বড় দুটি দল বিএনপি, ‘জামায়াত ও একটি অনিবন্ধিত দল এনসিপি এই সরকারের সুবিধা ভোগ করছে। এই তিনটি দলের বিশৃঙ্খলার কারণে আজ দুর্নীতি, দখল বাণিজ্য, পদায়ন ও বদলি বাণিজ্য এখনো বন্ধ হয়নি। আমরা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হিসেবে আজও রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে কিনা, তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি জোট গঠিত হতে পারে। এসব নতুন দল নিয়ে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে, যদিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আশা করছি, খুব শিগগিরই বিষয়টি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হবে।’

জনগণ ও গণতন্ত্রের বিজয় সুনিশ্চিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৯০-এর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন, নূর হোসেন জীবন দিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের জনগণ স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে হটিয়ে আবারও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ সুগম করেছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, তা এখনো পূরণ হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল, তা নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার কারণে আজ হুমকির মুখে।’

মজিবুর রহমান মঞ্জু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘হাসিনার আমলে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের অর্থ লুটপাট করে কানাডা, মালয়েশিয়ায় বেগমপাড়া বানানো হয়েছে। গুম-খুনের এক ভয়াল রাষ্ট্র কায়েম করেছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার। যে কারণে আজ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। জনগণ আর তাদের চায় না।’

মতবিনিময় সভায় জেলার গণমাধ্যমকর্মীসহ এবি পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন- জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় যুব পার্টির সদস্য সচিব ও ঝিনাইদহ-২ আসনে দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী হাদিউজ্জামান খোকন।

পরে মতবিনিময় সভায় ঝিনাইদহ জেলার তিনটি আসনে এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।