Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/bdopenne/public_html/wp-content/themes/newsflashpro/inc/template-functions.php on line 458
কাল সুনাম হলেও সুন্দরবন ছাড়বে না 'টাইগার গণি'!-BD Open News
১০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

কাল সুনাম হলেও সুন্দরবন ছাড়বে না ‘টাইগার গণি’!

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
  • / ১৩৯১ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

সম্ভব হলে পুরো সুন্দরবনকে নিজের বুকে আগলে রাখতে চান সুন্দরবনের নায়ক হিসেবে পরিচিত টাইগার গণি। কীভাবে তিনি বাঘের আস্তানা থেকে বন্যপ্রাণীকে ফিরিয়ে আনেন সেই গল্পে পাঠকরা মুগ্ধ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কালিঞ্চি গ্রামের মানুষও কম গর্বিত নয় যে গণি তাদের গ্রামের সন্তান। গণি ও তার পিতা বদরুদ্দিন গাজী মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অগ্রসর হন। জোয়ারে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। বাবা ছেলের চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। তখন অন্ধকারের মেঘে আকাশ কালো হয়ে গেল। দমকা হাওয়া বয়ে গেল। আপাতত স্থির থাকার বাধ্যবাধকতা। তাদের ছোট মাছভর্তি নৌকা পাতার মত উল্টে গেল।

এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষের লাশ দেশে ফিরিয়ে এনেছেন গণি। দুপুরের পরপরই ২৭ জনের ভিড়ের সামনে বোমারুটি আঘাত হানে। তাদের মধ্যে সুভাষ নামে একজন অনেক দিন বেঁচে যান। বাকিদের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ঘটনাস্থল থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রের দূরত্বের কারণে বাঁচানো যায়নি। প্রত্যেকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সুন্দরবনের সেই হতভাগ্য বনবাসীর মা, সন্তান বা স্ত্রী তাদের প্রিয়জনের মুখ অন্তত শেষবারের মতো দেখেছেন। বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারানো মানুষের ক্ষতবিক্ষত লাশের সামনে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট দুই হাত তুলে জানাজা দোয়াটুকু পাঠ করতে পেরেছে শিশুটি। শুধু উদ্ধারই নয়, দাফনও তদারকি করতেন গণি নিজেই।

অনেক সময় শরীরের অবস্থা এমন হয় যে তা দেখতে কষ্ট হয়। গনি যেন এক হাতে ভালোবাসার জিয়ন লাঠি ধরে অন্য হাতে প্রাণ দিচ্ছেন।

‘টাইগার গুণী’ নামে পরিচিত এই মানুষটি শুধু বিপন্ন বন্যপ্রাণীকেই উদ্ধার করেননি, বাঘটিকে বাঁচাতেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। লোকালয় ছেড়ে যাওয়া অসুস্থ বন্য প্রাণীদের উদ্ধার করে আবার বনে ছেড়ে দেন তিনি।

দুর্ভাগ্যবশত বহু বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করতে হচ্ছে। এই দুঃসাহসী মানুষটির বন্য জীবনের গল্পের পেছনে রয়েছে প্রতিদিন অসংখ্য ক্ষত আর না পাওয়ার বেদনা। তার অজানা জীবনের কথা শুনে প্রথম আলো কথা বলেছেন টাইগার গণি নামে পরিচিত গণি গাজীর সঙ্গে।

প্রশ্ন শুনে তিনি বললেন, ‘সুনাম আমার সময়।’ সুন্দরবন ছাড়া তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই রোজা থাকলেও বনের কাছাকাছি থাকতে হবে। এই বনের সাথে তার সম্পর্ক জন্ম থেকেই। তাকে কখন বন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল তা দেখার বিষয়। সেই গল্প বলতে গিয়ে প্রথম আলো বলেছেন ৩৩ বছর আগের এক বিকেলের গল্প। গণির বয়স তখন ১১ বা ১২ বছর।

বর্ষাকালে পশ্চিম সুন্দরবনে দখিনা হাওয়া বয়ে যায়। গণি ও তার পিতা বদরুদ্দিন গাজী মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অগ্রসর হন। জোয়ারে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। বাবা ছেলের চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। তখন অন্ধকারের মেঘে আকাশ কালো হয়ে গেল। দমকা হাওয়া বয়ে গেল। আপাতত স্থির থাকার বাধ্যবাধকতা। তাদের ছোট মাছভর্তি নৌকা পাতার মত উল্টে গেল।

নৌকায় ড্রাম হাতে নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সাঁতার কাটে দুজনে। ঝড়ের বেগে আশেপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে এখনই ডুবে যাবে। দীর্ঘ সময় ধরে সাঁতার কাটলে ছোট বাহু আলগা হয়ে যায়। গণি প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেল। তখনই ডাঙার অস্তিত্ব বাঁধা। অভ্যস্ত হয়ে গেলে সে দেখল তার বাবাও কয়েক হাত দূরে। ছোটবেলায় সেই দুর্যোগের গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দুর্যোগ ও দুর্যোগ আমাকে সুন্দরবনকে আরও ভালোবাসতে শিখিয়েছে।

তিনিও নৌকার মাঝি হয়ে বাঘের মুখ থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে থাকেন। 2008 সালে তিনি একজন জেলে ছিলেন। একদিন একটি বাঘ বনে দুই মধু সংগ্রহকারীকে ধরে। সেখান থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ। এ দৃশ্য দেখে গণি গাজী উদ্ধার অভিযানে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাইলেন। এরপর সুযোগ আসে বন বিভাগের ‘টাইগার রেসপন্স’ দলের হয়ে কাজ করার। পরের বছর তিনি দলের নেতা হন। তিনি 2019 সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাজটি চলে গেছে। এরপর থেকে গনি গাজীর নির্দিষ্ট আয়ের আর কোনো উপায় নেই।

2020 সালে, তার নতুন চাকরি ছিল চট্টগ্রামের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে। সেখানে বসে বন্যপ্রাণীর পরিচর্যা করা সুন্দরবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। পরিচিতরা ফেসবুকে সুন্দরবনের ছবি দেখে মন খারাপ করে। পরিবারের কথা চিন্তা করে তিনি দেড় বছর ধরে কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় কাজ করেন। এরপর করোনার অজুহাতে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন কালিঞ্চিতে। কিন্তু অভাব আর আবেগ বোঝে না।

বড় মেয়েকে বিয়ে করেন। স্ত্রী, ছেলে ও জামাইকে নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন গণি গাজীর অসুস্থ বড় বোন। মোসাম্মৎ খোদেজা খাতুন নামের এই বড় বোনের সব দায়িত্বও রয়েছে তার পঞ্চাশের কোঠায় এবং কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। এদিকে শাহিনুর আলমের ছেলে এইচএসসি পাস করলেও চাকরি পাননি।

পরিবর্তে একজন চাকরি দেওয়ার নামে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গনি গাজীকে যে টাকা ধার দিতে হয়েছে

নিউজটি শেয়ার করুন

কাল সুনাম হলেও সুন্দরবন ছাড়বে না ‘টাইগার গণি’!

আপডেট সময় ০৩:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২

সম্ভব হলে পুরো সুন্দরবনকে নিজের বুকে আগলে রাখতে চান সুন্দরবনের নায়ক হিসেবে পরিচিত টাইগার গণি। কীভাবে তিনি বাঘের আস্তানা থেকে বন্যপ্রাণীকে ফিরিয়ে আনেন সেই গল্পে পাঠকরা মুগ্ধ। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কালিঞ্চি গ্রামের মানুষও কম গর্বিত নয় যে গণি তাদের গ্রামের সন্তান। গণি ও তার পিতা বদরুদ্দিন গাজী মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অগ্রসর হন। জোয়ারে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। বাবা ছেলের চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। তখন অন্ধকারের মেঘে আকাশ কালো হয়ে গেল। দমকা হাওয়া বয়ে গেল। আপাতত স্থির থাকার বাধ্যবাধকতা। তাদের ছোট মাছভর্তি নৌকা পাতার মত উল্টে গেল।

এ পর্যন্ত শতাধিক মানুষের লাশ দেশে ফিরিয়ে এনেছেন গণি। দুপুরের পরপরই ২৭ জনের ভিড়ের সামনে বোমারুটি আঘাত হানে। তাদের মধ্যে সুভাষ নামে একজন অনেক দিন বেঁচে যান। বাকিদের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ঘটনাস্থল থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রের দূরত্বের কারণে বাঁচানো যায়নি। প্রত্যেকের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সুন্দরবনের সেই হতভাগ্য বনবাসীর মা, সন্তান বা স্ত্রী তাদের প্রিয়জনের মুখ অন্তত শেষবারের মতো দেখেছেন। বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারানো মানুষের ক্ষতবিক্ষত লাশের সামনে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট দুই হাত তুলে জানাজা দোয়াটুকু পাঠ করতে পেরেছে শিশুটি। শুধু উদ্ধারই নয়, দাফনও তদারকি করতেন গণি নিজেই।

অনেক সময় শরীরের অবস্থা এমন হয় যে তা দেখতে কষ্ট হয়। গনি যেন এক হাতে ভালোবাসার জিয়ন লাঠি ধরে অন্য হাতে প্রাণ দিচ্ছেন।

‘টাইগার গুণী’ নামে পরিচিত এই মানুষটি শুধু বিপন্ন বন্যপ্রাণীকেই উদ্ধার করেননি, বাঘটিকে বাঁচাতেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। লোকালয় ছেড়ে যাওয়া অসুস্থ বন্য প্রাণীদের উদ্ধার করে আবার বনে ছেড়ে দেন তিনি।

দুর্ভাগ্যবশত বহু বছর ধরে বিনা বেতনে কাজ করতে হচ্ছে। এই দুঃসাহসী মানুষটির বন্য জীবনের গল্পের পেছনে রয়েছে প্রতিদিন অসংখ্য ক্ষত আর না পাওয়ার বেদনা। তার অজানা জীবনের কথা শুনে প্রথম আলো কথা বলেছেন টাইগার গণি নামে পরিচিত গণি গাজীর সঙ্গে।

প্রশ্ন শুনে তিনি বললেন, ‘সুনাম আমার সময়।’ সুন্দরবন ছাড়া তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাই রোজা থাকলেও বনের কাছাকাছি থাকতে হবে। এই বনের সাথে তার সম্পর্ক জন্ম থেকেই। তাকে কখন বন থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল তা দেখার বিষয়। সেই গল্প বলতে গিয়ে প্রথম আলো বলেছেন ৩৩ বছর আগের এক বিকেলের গল্প। গণির বয়স তখন ১১ বা ১২ বছর।

বর্ষাকালে পশ্চিম সুন্দরবনে দখিনা হাওয়া বয়ে যায়। গণি ও তার পিতা বদরুদ্দিন গাজী মাথাভাঙ্গা নদীর ধারে অগ্রসর হন। জোয়ারে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। বাবা ছেলের চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করছে। তখন অন্ধকারের মেঘে আকাশ কালো হয়ে গেল। দমকা হাওয়া বয়ে গেল। আপাতত স্থির থাকার বাধ্যবাধকতা। তাদের ছোট মাছভর্তি নৌকা পাতার মত উল্টে গেল।

নৌকায় ড্রাম হাতে নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সাঁতার কাটে দুজনে। ঝড়ের বেগে আশেপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে এখনই ডুবে যাবে। দীর্ঘ সময় ধরে সাঁতার কাটলে ছোট বাহু আলগা হয়ে যায়। গণি প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেল। তখনই ডাঙার অস্তিত্ব বাঁধা। অভ্যস্ত হয়ে গেলে সে দেখল তার বাবাও কয়েক হাত দূরে। ছোটবেলায় সেই দুর্যোগের গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দুর্যোগ ও দুর্যোগ আমাকে সুন্দরবনকে আরও ভালোবাসতে শিখিয়েছে।

তিনিও নৌকার মাঝি হয়ে বাঘের মুখ থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে থাকেন। 2008 সালে তিনি একজন জেলে ছিলেন। একদিন একটি বাঘ বনে দুই মধু সংগ্রহকারীকে ধরে। সেখান থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ। এ দৃশ্য দেখে গণি গাজী উদ্ধার অভিযানে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাইলেন। এরপর সুযোগ আসে বন বিভাগের ‘টাইগার রেসপন্স’ দলের হয়ে কাজ করার। পরের বছর তিনি দলের নেতা হন। তিনি 2019 সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু প্রকল্প শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাজটি চলে গেছে। এরপর থেকে গনি গাজীর নির্দিষ্ট আয়ের আর কোনো উপায় নেই।

2020 সালে, তার নতুন চাকরি ছিল চট্টগ্রামের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে। সেখানে বসে বন্যপ্রাণীর পরিচর্যা করা সুন্দরবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। পরিচিতরা ফেসবুকে সুন্দরবনের ছবি দেখে মন খারাপ করে। পরিবারের কথা চিন্তা করে তিনি দেড় বছর ধরে কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় কাজ করেন। এরপর করোনার অজুহাতে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন কালিঞ্চিতে। কিন্তু অভাব আর আবেগ বোঝে না।

বড় মেয়েকে বিয়ে করেন। স্ত্রী, ছেলে ও জামাইকে নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন গণি গাজীর অসুস্থ বড় বোন। মোসাম্মৎ খোদেজা খাতুন নামের এই বড় বোনের সব দায়িত্বও রয়েছে তার পঞ্চাশের কোঠায় এবং কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। এদিকে শাহিনুর আলমের ছেলে এইচএসসি পাস করলেও চাকরি পাননি।

পরিবর্তে একজন চাকরি দেওয়ার নামে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গনি গাজীকে যে টাকা ধার দিতে হয়েছে