১১:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

“সবাই আমাকে ত্যাগ করেছে, আমি একা”

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:৩৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২
  • / ১২১০ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

মোঃ মেরাজের পরাজয় শুরু হয় ১৪ বছর বয়সে। সে তখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। একদিন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মা মারা যান। ছেলের কথা ভেবে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই মা বাবাকে নিয়েই শুরু হয় মেরাজের নতুন সংসার। এখন তার বয়স 23 বছর। দীর্ঘ ৯ বছর পর তার জীবনে আবারও শোকের ছায়া নেমে আসে। বাবা-মা দুজনেই একদিন হারিয়ে গেল।

মেরাজদের বসবাস ছিল গাজীপুরের কামারজুরী এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের খৈলকৈর বগার্টেক এলাকায় একটি প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে মেরাজের বাবা একেএম জিয়াউর রহমান ও সৎ মা মাহমুদা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কীভাবে ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানায়নি। জিয়াউর-মাহমুদা দম্পতির একমাত্র সন্তান মেরাজ। তিনি সাভার গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে আজ সকাল থেকে জিয়াউরের বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকেন প্রতিবেশী ও স্বজনরা। বিকেলে জিয়াউরের বাড়িতে মানুষের ভিড় দেখা যায়। কেউ বিছানায়, কেউ মেঝেতে, কেউ সোফায় বিলাপ করছিল।

ভিড়ের মধ্যে একটা চেয়ারে বসে ছিল মেরাজ। তাকে ঘিরে আছে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কেউ কেউ মেরাজের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এসময় তার মোবাইলে একটি কল আসে। ফোন ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেরাজ। তিনি বলতে থাকেন, ‘সব শেষ, সব… এই পৃথিবীতে আমার আর কেউ নেই। সবাই আমার উপর ক্ষিপ্ত। আমি একাই গিয়েছিলাম।’ কিছুক্ষণ পর চোখের জল মুছে দিল। এর পর সে শান্ত হয়ে তার বাবা-মায়ের কথা বলতে থাকে। মেরাজ BD OPEN NEWS

>কে বলেন, “(বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাবার সঙ্গে কথা হয়। আমি পাস্তা খেতে চাই। বলে, “পাস্তা নিয়ে আসব।” কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও বাবা-মা ফিরে আসেননি। এরপর যতবার ফোন করেছি ততবার ফোন রিসিভ করা হচ্ছে না।পরে সকালে জানতে পারি আমার বাবা মা আর নেই।

বাবা-মায়ের কথা স্মরণ করে মেরাজ বলেন, তাঁর বাবা-মা দুজনেই খুব ভালো ছিলেন। সবাই তাদের পছন্দ করেছে। কোন শত্রু ছিল না. কিন্তু কে বা কারা এ কাজ করেছে তা এখনো বুঝতে পারছি না। তিনি শুধু সুষ্ঠু বিচার চান।

জিয়াউর রহমান ছয় ভাই ও এক বোন। ভাইদের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তারা একই জায়গায় ছয় ভাইয়ের পরিবার নিয়ে থাকেন। তার বাবা বেঁচে নেই। মা জমিলা আক্তারের বয়স সত্তর। জিয়াউর টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং তার স্ত্রী মাহমুদা একই এলাকার আমজাদ আলী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরি করতেন। প্রতিদিন তারা প্রাইভেট কারে একসাথে যাতায়াত করতেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

“সবাই আমাকে ত্যাগ করেছে, আমি একা”

আপডেট সময় ০৬:৩৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২

মোঃ মেরাজের পরাজয় শুরু হয় ১৪ বছর বয়সে। সে তখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। একদিন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মা মারা যান। ছেলের কথা ভেবে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই মা বাবাকে নিয়েই শুরু হয় মেরাজের নতুন সংসার। এখন তার বয়স 23 বছর। দীর্ঘ ৯ বছর পর তার জীবনে আবারও শোকের ছায়া নেমে আসে। বাবা-মা দুজনেই একদিন হারিয়ে গেল।

মেরাজদের বসবাস ছিল গাজীপুরের কামারজুরী এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের খৈলকৈর বগার্টেক এলাকায় একটি প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে মেরাজের বাবা একেএম জিয়াউর রহমান ও সৎ মা মাহমুদা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কীভাবে ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানায়নি। জিয়াউর-মাহমুদা দম্পতির একমাত্র সন্তান মেরাজ। তিনি সাভার গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে আজ সকাল থেকে জিয়াউরের বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকেন প্রতিবেশী ও স্বজনরা। বিকেলে জিয়াউরের বাড়িতে মানুষের ভিড় দেখা যায়। কেউ বিছানায়, কেউ মেঝেতে, কেউ সোফায় বিলাপ করছিল।

ভিড়ের মধ্যে একটা চেয়ারে বসে ছিল মেরাজ। তাকে ঘিরে আছে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কেউ কেউ মেরাজের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এসময় তার মোবাইলে একটি কল আসে। ফোন ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেরাজ। তিনি বলতে থাকেন, ‘সব শেষ, সব… এই পৃথিবীতে আমার আর কেউ নেই। সবাই আমার উপর ক্ষিপ্ত। আমি একাই গিয়েছিলাম।’ কিছুক্ষণ পর চোখের জল মুছে দিল। এর পর সে শান্ত হয়ে তার বাবা-মায়ের কথা বলতে থাকে। মেরাজ BD OPEN NEWS

>কে বলেন, “(বুধবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাবার সঙ্গে কথা হয়। আমি পাস্তা খেতে চাই। বলে, “পাস্তা নিয়ে আসব।” কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও বাবা-মা ফিরে আসেননি। এরপর যতবার ফোন করেছি ততবার ফোন রিসিভ করা হচ্ছে না।পরে সকালে জানতে পারি আমার বাবা মা আর নেই।

বাবা-মায়ের কথা স্মরণ করে মেরাজ বলেন, তাঁর বাবা-মা দুজনেই খুব ভালো ছিলেন। সবাই তাদের পছন্দ করেছে। কোন শত্রু ছিল না. কিন্তু কে বা কারা এ কাজ করেছে তা এখনো বুঝতে পারছি না। তিনি শুধু সুষ্ঠু বিচার চান।

জিয়াউর রহমান ছয় ভাই ও এক বোন। ভাইদের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তারা একই জায়গায় ছয় ভাইয়ের পরিবার নিয়ে থাকেন। তার বাবা বেঁচে নেই। মা জমিলা আক্তারের বয়স সত্তর। জিয়াউর টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং তার স্ত্রী মাহমুদা একই এলাকার আমজাদ আলী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরি করতেন। প্রতিদিন তারা প্রাইভেট কারে একসাথে যাতায়াত করতেন।