০২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
মহানবী (সাঃ) কে অপমান করা

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৫৮:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২
  • / ১০৮৮ বার পড়া হয়েছে

Mohammad s

নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে নুপুর শর্মাসহ ভারতের দুই শীর্ষ নেতার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সর্বত্র বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করার জন্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়াদিল্লি ছাড়াও উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। লখনউ, সাহারানপুর, প্রয়াগরাজ (প্রাক্তন এলাহাবাদ), দেওবন্দ, ফিরোজাবাদ এবং মোরাদাবাদ সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় জুমার নামাজের পরে লোকেরা বিক্ষোভে যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা মহানবী (সা.)-কে অবমাননাকারীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।

অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সাহারানপুরের নবাবগঞ্জে বিশাল মিছিল বের হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি উত্তেজনা থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আজ প্রয়াগরাজে বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে শত শত মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেয়। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদেও বিক্ষোভ হয়েছে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, গুজরাটের আহমেদাবাদ এবং মহারাষ্ট্রের নবী মুম্বাই ছাড়াও কাশ্মীরের শ্রীনগরের বিভিন্ন অংশ থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে একটি মন্দিরের সামনে পদদলিত হয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

আজ জুমার নামাজের পর সব এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। দিল্লির জামে মসজিদে নামাজের পর বিক্ষোভে অংশ নেন শত শত মানুষ। মসজিদের সিঁড়িতে সমবেত হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর বিরুদ্ধে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। কারও কারও হাতে নুপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল। প্রায় আধাঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীরা মসজিদ মাঠ ত্যাগ করে প্রধান সড়কের দিকে চলে যায়। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

দিল্লির জামা মসজিদের শাহী ইমাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জুমার নামাজের পর কাউকে প্রতিবাদ করার ডাক দেওয়া হয়নি। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শ্বেতা চৌহান সাংবাদিকদের জানান, প্রতি শুক্রবারের মতো জুমার নামাজে প্রায় দেড় হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। নামাজের পর জামে মসজিদের প্রশস্ত সিঁড়িতে প্রায় ৩০০ মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা চলে যায়। অনুমতি ছাড়া প্রতিবাদ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই নেতা নূপুর শর্মা এবং নবীন জিন্দালের বিরুদ্ধে মহানবী (সা.) সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নবীনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, নুপুরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ দুজনের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের আরও বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়াইসি ও সাংবাদিক সাবা নকভি। কিন্তু মূল অভিযুক্ত নূপুর ও নবীনকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আন্দোলনকারীদের আজকের প্রধান দাবি ছিল এই দুজনকে গ্রেফতার করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মহানবী (সাঃ) কে অপমান করা

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০১:৫৮:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২

নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে নুপুর শর্মাসহ ভারতের দুই শীর্ষ নেতার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সর্বত্র বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করার জন্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নয়াদিল্লি ছাড়াও উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। লখনউ, সাহারানপুর, প্রয়াগরাজ (প্রাক্তন এলাহাবাদ), দেওবন্দ, ফিরোজাবাদ এবং মোরাদাবাদ সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় জুমার নামাজের পরে লোকেরা বিক্ষোভে যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা মহানবী (সা.)-কে অবমাননাকারীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।

অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সাহারানপুরের নবাবগঞ্জে বিশাল মিছিল বের হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি উত্তেজনা থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আজ প্রয়াগরাজে বিক্ষোভ চলাকালীন কিছু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে শত শত মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেয়। তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদেও বিক্ষোভ হয়েছে। পাঞ্জাবের লুধিয়ানা, গুজরাটের আহমেদাবাদ এবং মহারাষ্ট্রের নবী মুম্বাই ছাড়াও কাশ্মীরের শ্রীনগরের বিভিন্ন অংশ থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে একটি মন্দিরের সামনে পদদলিত হয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

আজ জুমার নামাজের পর সব এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। দিল্লির জামে মসজিদে নামাজের পর বিক্ষোভে অংশ নেন শত শত মানুষ। মসজিদের সিঁড়িতে সমবেত হয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর বিরুদ্ধে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। কারও কারও হাতে নুপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল। প্রায় আধাঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীরা মসজিদ মাঠ ত্যাগ করে প্রধান সড়কের দিকে চলে যায়। এ সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

দিল্লির জামা মসজিদের শাহী ইমাম সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জুমার নামাজের পর কাউকে প্রতিবাদ করার ডাক দেওয়া হয়নি। পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শ্বেতা চৌহান সাংবাদিকদের জানান, প্রতি শুক্রবারের মতো জুমার নামাজে প্রায় দেড় হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। নামাজের পর জামে মসজিদের প্রশস্ত সিঁড়িতে প্রায় ৩০০ মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে তারা চলে যায়। অনুমতি ছাড়া প্রতিবাদ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই নেতা নূপুর শর্মা এবং নবীন জিন্দালের বিরুদ্ধে মহানবী (সা.) সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নবীনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, নুপুরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ দুজনের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের আরও বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংসদ আসাউদ্দিন ওয়াইসি ও সাংবাদিক সাবা নকভি। কিন্তু মূল অভিযুক্ত নূপুর ও নবীনকে আজও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আন্দোলনকারীদের আজকের প্রধান দাবি ছিল এই দুজনকে গ্রেফতার করা।