১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকান্ডের ১৬ বছর, এখন থেকে এটি পালিত হবে “শহীদ সেনা দিবস” হিসেবে
নিজস্ব সংবাদ :
- আপডেট সময় ০৮:০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৬৯ বার পড়া হয়েছে
২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি: পিলখানা হত্যাকান্ডের ১৬ বছর, এখন থেকে এটি পালিত হবে “শহীদ সেনা দিবস” হিসেবে
২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের
ইতিহাসের দুইটি শোকাবহ দিন। ২০০৯ সালে এই দুই দিনে পরিকল্পিত উপায়ে বিদ্রোহের নামে ৫৭জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর অনেক সেনা কর্মকর্তাদের লাশও বিকৃত করা হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) শহীদ সেনাকর্মকর্তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছে, তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা এবং শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছে।
গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বার্তায় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, পিলখানা হত্যাকান্ডের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। বিচারিক আদালতে দেওয়া দণ্ডিতদের মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিচার হয় অধিনায়কদের সামারি ট্রায়ালে (সংক্ষিপ্ত বিচারিক প্রক্রিয়ায়)। তাতে ১০ হাজার ৯৭৩ জনের বিভিন্ন ধরনের সাজা হয়; তাঁদের মধ্যে ৮ হাজার ৭৫৯ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অন্যরা প্রশাসনিক দণ্ড শেষে আবার চাকুরিতে যোগ দেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে সারা দেশে বিশেষ আদালত গঠন করে বিচার করা হয়। বিশেষ আদালতে ৫৭টি মামলায় ৫ হাজার ৯২৬ জন জওয়ানের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়।
দেখার বিষয় হল, পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে মূলধারার গনমাধ্যম এবং জনপরিসরে বিচার নিয়ে কথা হলেও এতবড় একটি জাতীয় বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে কেউ এতোদিন আগ্রহ দেখায়নি। কোন ধরনের পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় বসার এক মাসের মাথায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মত স্পর্শকাতর একটি বাহিনীতে কথিত বিদ্রোহ দেখা দেয়? আবার সে বিদ্রোহ ৩৬ ঘন্টা অব্যাহত থাকে এবং একটি সামরিক সংঘাত মীমাংসার দায়িত্ব দেয়া হয় আওয়ামী লীগের চিহ্নিত কিছু নেতৃবৃন্দকে? সামরিক ও বেসামরিক দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন কেন প্রকাশিত হয়নি ? মূলতঃ বিডিআর বিদ্রোহের নামে ঐদিনই বাংলাদেশের একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির পরিপূর্ণ বশীভূত করে ফেলা হয়েছিলো। গণতন্ত্র আর আইনের শাসনের মত বিমূর্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে দৃশ্যমান সকল প্রতিষ্ঠানকেই আওয়ামী লীগ বিকল-বিফল করে ফেলে ছিলো। আর, এ ধারার সূত্রপাত হয়েছিল দেশের আজাদীর প্রতীক সেনাবাহিনীর মত জনপ্রিয় এবং আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে বারবার রুখে দাঁড়ানো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যার মাধ্যমে। স্বাধীনতা যুদ্ধেও এত পরিমান সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য শহীদ হয়নি। আর, এ ঘটনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে দীর্ঘসময়ের জন্য বিপন্ন করে তুলেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আশার দিক হলো ফ্যাসীবাদের পতনের পর সরকার পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে সাবেক বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল (অবঃ) আ.ল.ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি স্বাধীন পনঃতদন্ত কমিশন গঠন করেছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিপন্নকারী এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে দায়ী প্রকৃত দেশদ্রোহীরা চিহ্নিত হবে এবং তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো সম্ভব হবে।
নেতৃবৃন্দ দেশবাসীকে যথাযোগ্য মর্যাদায় “শহীদ সেনা দিবস” আহবান জানান।
ট্যাগস :