১০:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

নেত্রকোনায় এক সপ্তাহ রোদ থাকার পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২
  • / ১০৩৭ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে আজ বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়নি। এক সপ্তাহ পর রোববার সকাল থেকে নেত্রকোনার আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। পরে বিকেল ৫টার দিকে প্রায় আধা ঘণ্টা হালকা বৃষ্টি হয়। তারপর আবার আকাশ পরিষ্কার। নেত্রকোনার আকাশে শেষবার সূর্যের দেখা মিলেছিল ১০ জুন।

এদিকে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার উঁচু স্থান থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ ও মদন উপজেলায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বারহাট্টা, আটপাড়াসহ অন্যান্য উপজেলায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে ৬০৫টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত বলেন, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানির স্তর এখন বিপদসীমার ৫৬২ সেন্টিমিটার নিচে। এই সময়ে বিপদের মাত্রা 15.69 সেমি। তবে উবদাখালী ও কংসসহ ধানকু নদীর পানি বিপদসীমার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বর্ষণ ও বর্ষণে জেলার প্রায় ১০টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সীমান্তের কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নেয়। বন্যার পানিতে কলমাকান্দার ৩৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ৯২ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গাপুর শহরের সাতটি ইউনিয়নে একই অবস্থা। কলমাকান্দার লেঙ্গুড়া, রংছটি, খরনাই, বড়খাপন, কৈলাটি, পোগলা ও নাজিরপুর ইউনিয়নে অন্তত ৫৫৫টি মাটির ঘর সম্পূর্ণ ও আংশিক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

কলমাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম জানান, লেঙ্গুড়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ১৫৫টি বাড়ি ধসে পড়েছে। দুর্গাপুরের ইউএনও রাজীব-উল-আহসান জানান, তার উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো। সেখানে 95টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া বিরিশিরি, চণ্ডীগড় ও সদর ইউনিয়নের আড়াইশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

এদিকে বানভাসি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে। দুই উপজেলার ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ছয় হাজার ৪৬০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে কলমাকান্দায় ৩৬টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, জেলায় ২৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে স্থান পেয়েছে ১৯ হাজার মানুষ। বন্যা কবলিত প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম মোতায়েন রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে প্রশাসন।

নিউজটি শেয়ার করুন

নেত্রকোনায় এক সপ্তাহ রোদ থাকার পর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে

আপডেট সময় ০২:৪৯:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে আজ বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়নি। এক সপ্তাহ পর রোববার সকাল থেকে নেত্রকোনার আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। পরে বিকেল ৫টার দিকে প্রায় আধা ঘণ্টা হালকা বৃষ্টি হয়। তারপর আবার আকাশ পরিষ্কার। নেত্রকোনার আকাশে শেষবার সূর্যের দেখা মিলেছিল ১০ জুন।

এদিকে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলার উঁচু স্থান থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ ও মদন উপজেলায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বারহাট্টা, আটপাড়াসহ অন্যান্য উপজেলায় পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে ৬০৫টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত বলেন, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানির স্তর এখন বিপদসীমার ৫৬২ সেন্টিমিটার নিচে। এই সময়ে বিপদের মাত্রা 15.69 সেমি। তবে উবদাখালী ও কংসসহ ধানকু নদীর পানি বিপদসীমার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বর্ষণ ও বর্ষণে জেলার প্রায় ১০টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সীমান্তের কলমাকান্দা ও দুর্গাপুরে পরিস্থিতি ভয়াবহ মোড় নেয়। বন্যার পানিতে কলমাকান্দার ৩৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ৯২ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গাপুর শহরের সাতটি ইউনিয়নে একই অবস্থা। কলমাকান্দার লেঙ্গুড়া, রংছটি, খরনাই, বড়খাপন, কৈলাটি, পোগলা ও নাজিরপুর ইউনিয়নে অন্তত ৫৫৫টি মাটির ঘর সম্পূর্ণ ও আংশিক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

কলমাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম জানান, লেঙ্গুড়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ১৫৫টি বাড়ি ধসে পড়েছে। দুর্গাপুরের ইউএনও রাজীব-উল-আহসান জানান, তার উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো। সেখানে 95টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া বিরিশিরি, চণ্ডীগড় ও সদর ইউনিয়নের আড়াইশ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

এদিকে বানভাসি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে। দুই উপজেলার ৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে এ পর্যন্ত ছয় হাজার ৪৬০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে কলমাকান্দায় ৩৬টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, জেলায় ২৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে স্থান পেয়েছে ১৯ হাজার মানুষ। বন্যা কবলিত প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম মোতায়েন রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে প্রশাসন।