০৮:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গু রোগীর তথ্যে অসংলগ্ন, ওষুধ স্প্রে না করেই ফিরতে হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২
  • / ১৭৩৪ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা ডা. মুকুল (20) ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছেন। এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হওয়ায় করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে মুকুলের পরিবার জানিয়েছে, মুকুল ডেঙ্গিতে আক্রান্ত নন। তাই মশা নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রম চালাতে এলাকা থেকে ফিরেছেন কর্পোরেশনের কর্মীরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম দ্বারা সংকলিত একটি তালিকা অনুসারে মুগদারের বাসিন্দা গোলাম মহিউদ্দিন (৪৩)ও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। মুগদা এলাকায় মহিউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জানান, তিনি সিরাজগঞ্জে থাকেন।

এদিকে, সঠিক ঠিকানা না দিয়ে সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর তালিকা দেওয়ায় ডেঙ্গু মশা নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রোগীর সঠিক ঠিকানা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।

গত ১৫ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাইরের রোগীদেরও করপোরেশনের রোগী দেখানো হচ্ছে। একাধিক দিন ধরে তালিকায় একই রোগীর নাম দেওয়া হচ্ছে। তালিকায় এমন লোকের নামও রয়েছে যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি।

দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. প্রথম আলোকে আবু নাসের বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিদিন যে তালিকা দেওয়া হচ্ছে তা মশা নির্মূল কার্যক্রমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তালিকায় পাওয়া ঠিকানা অনুযায়ী, ডেঙ্গু রোগীর আবাসনের ৩০০ গজের মধ্যে বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হয় এবং ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালানো হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তালিকা পর্যালোচনা করলে ভুল তথ্য প্রকাশ পায়। এ ধরনের ডেঙ্গু রোগীদের পুরো ঠিকানা দেওয়া হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়। কিছু রোগীকে ভুল মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। রোগীর তালিকায় এসব অসঙ্গতি মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে দক্ষিণ সিটি এলাকায় ১৬১ জন রোগী এসেছে। মোট রোগীর সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

ডেঙ্গু রোগীর সঠিক তথ্য জানতে প্রথম আলো হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে। ফোন পেয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সেলিম রায়হান প্রথম আলো</em>কে বলেন, বিষয়টি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে তাদের জানানো হয়েছে। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সিটি করপোরেশনে ভর্তি হওয়া রোগীদের যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে সে তথ্যই তারা দিচ্ছেন।

তবে সেলিম রায়হান আরও বলেন, কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে প্রায়ই রোগীর আত্মীয়ের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সাউথ সিটি থেকে রোগীর নম্বরে ফোন করা হলে তিনি রোগীর আত্মীয় কিনা জানতেও অনুরোধ করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির এমন সমস্যা, তাহলে উত্তর সিটি করপোরেশনের কী অবস্থা? উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. সঙ্গে গোলাম মোস্তফা সরোয়ার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে তাদের দেওয়া তালিকায় কোনো অমিল খুঁজে পাননি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৬ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি হওয়া রোগীরা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১১০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ১০৬। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৭ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ডেঙ্গু রোগীর তথ্যে অসংলগ্ন, ওষুধ স্প্রে না করেই ফিরতে হচ্ছে

আপডেট সময় ০৪:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা ডা. মুকুল (20) ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছেন। এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হওয়ায় করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে মুকুলের পরিবার জানিয়েছে, মুকুল ডেঙ্গিতে আক্রান্ত নন। তাই মশা নির্মূলে বিশেষ কার্যক্রম চালাতে এলাকা থেকে ফিরেছেন কর্পোরেশনের কর্মীরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম দ্বারা সংকলিত একটি তালিকা অনুসারে মুগদারের বাসিন্দা গোলাম মহিউদ্দিন (৪৩)ও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। মুগদা এলাকায় মহিউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জানান, তিনি সিরাজগঞ্জে থাকেন।

এদিকে, সঠিক ঠিকানা না দিয়ে সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর তালিকা দেওয়ায় ডেঙ্গু মশা নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রোগীর সঠিক ঠিকানা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।

গত ১৫ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, অধিদপ্তরের দেওয়া তালিকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাইরের রোগীদেরও করপোরেশনের রোগী দেখানো হচ্ছে। একাধিক দিন ধরে তালিকায় একই রোগীর নাম দেওয়া হচ্ছে। তালিকায় এমন লোকের নামও রয়েছে যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি।

দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. প্রথম আলোকে আবু নাসের বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতিদিন যে তালিকা দেওয়া হচ্ছে তা মশা নির্মূল কার্যক্রমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তালিকায় পাওয়া ঠিকানা অনুযায়ী, ডেঙ্গু রোগীর আবাসনের ৩০০ গজের মধ্যে বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হয় এবং ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালানো হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তালিকা পর্যালোচনা করলে ভুল তথ্য প্রকাশ পায়। এ ধরনের ডেঙ্গু রোগীদের পুরো ঠিকানা দেওয়া হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র এলাকার নাম উল্লেখ করা হয়। কিছু রোগীকে ভুল মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। রোগীর তালিকায় এসব অসঙ্গতি মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে দক্ষিণ সিটি এলাকায় ১৬১ জন রোগী এসেছে। মোট রোগীর সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

ডেঙ্গু রোগীর সঠিক তথ্য জানতে প্রথম আলো হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে। ফোন পেয়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সেলিম রায়হান প্রথম আলো</em>কে বলেন, বিষয়টি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে তাদের জানানো হয়েছে। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সিটি করপোরেশনে ভর্তি হওয়া রোগীদের যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে সে তথ্যই তারা দিচ্ছেন।

তবে সেলিম রায়হান আরও বলেন, কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে প্রায়ই রোগীর আত্মীয়ের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সাউথ সিটি থেকে রোগীর নম্বরে ফোন করা হলে তিনি রোগীর আত্মীয় কিনা জানতেও অনুরোধ করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির এমন সমস্যা, তাহলে উত্তর সিটি করপোরেশনের কী অবস্থা? উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. সঙ্গে গোলাম মোস্তফা সরোয়ার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম থেকে তাদের দেওয়া তালিকায় কোনো অমিল খুঁজে পাননি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৬ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি হওয়া রোগীরা সবাই ঢাকার বাসিন্দা। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১১০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ১০৬। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০৭ জন।