০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ঝড়ের মধ্যে শিশুর জন্ম, প্রধানমন্ত্রীর নাম ‘বন্যা’

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
  • / ৯৭০ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকা থেকে বন্যা ও ঝড়ের কবলে পড়া প্রসব বেদনায় গর্ভবতী স্ত্রীকে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।

এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই রাতেই মা ও নবজাতককে দেখতে যান জেলা প্রশাসক। জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় নিয়ে নৌকায় করে হাসপাতালে ছুটে যান সুমন মিয়া (৩৫)। পথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নৌকা আটকে যায়। এরপর জেলা প্রশাসকের সহায়তায় সুমিলা মিয়ার স্ত্রী জামিলা বেগম (২৮) নিজ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করলে জেলা প্রশাসক তাকে বিষয়টি জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগে জন্ম নেওয়া শিশুর নাম রাখেন নূহ আলম প্লাবন।

আজ সোমবার জেলা প্রশাসক মো. এ তথ্য জানিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নবজাতক বন্যাকে নতুন পোশাক, মশারি, তেল, লোশনসহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে মা ও নবজাতকের অবস্থা ভালো রয়েছে।

সুমন মিয়া ও জমিলা বেগমের বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে। জমিলার বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকায়। সন্তান জন্ম দিতে জগন্নাথপুর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে সুনামগঞ্জে আসেন সুমন মিয়া। তিনি একটি ভাড়া করা মাইক্রোবাসের চালক। এই দম্পতির আরেক ছেলে তাহসিন মিয়া রয়েছে।

আজ বিকেলে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বন্যার জন্ম হয়। এরপর তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রাতে ডেপুটি আবার তাকে দেখতে গেলেন। সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় জেলা প্রশাসক বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার ছেলের নাম রাখেন নূহ আলম প্লাবন।

সুমন মিয়া জানান, শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে রোববার বিকেলে নবজাতককে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি নিজেই তাদের ১০ হাজার টাকা উপহার দেন।

শনিবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। “ডিসি সাব যা করছেন তা আমরা কখনই ভুলব না,” তিনি বলেছিলেন। যে অবস্থায় ছিলাম সেই অবস্থায় থাকতে পারিনি। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নাম নিয়ে আমার ছেলে বড় হবে- এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। ‘

কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সুমন মিয়া। তিনি বলেন, আমি একজন গরিব মানুষ। আমার নিজের ভিটাও নেই। আমি অন্যের বাড়িতে থাকি। আমার মতো দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছি তা আমি সবসময় মনে রাখব। প্রধানমন্ত্রী নিজেই আমার ছেলের নাম রাখছেন, কত উপহার দিয়েছেন- এর চেয়ে সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে। ‘

নিউজটি শেয়ার করুন

ঝড়ের মধ্যে শিশুর জন্ম, প্রধানমন্ত্রীর নাম ‘বন্যা’

আপডেট সময় ০৫:৪০:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মল্লিকপুর এলাকা থেকে বন্যা ও ঝড়ের কবলে পড়া প্রসব বেদনায় গর্ভবতী স্ত্রীকে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।

এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় ওই রাতেই মা ও নবজাতককে দেখতে যান জেলা প্রশাসক। জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় নিয়ে নৌকায় করে হাসপাতালে ছুটে যান সুমন মিয়া (৩৫)। পথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নৌকা আটকে যায়। এরপর জেলা প্রশাসকের সহায়তায় সুমিলা মিয়ার স্ত্রী জামিলা বেগম (২৮) নিজ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করলে জেলা প্রশাসক তাকে বিষয়টি জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগে জন্ম নেওয়া শিশুর নাম রাখেন নূহ আলম প্লাবন।

আজ সোমবার জেলা প্রশাসক মো. এ তথ্য জানিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নবজাতক বন্যাকে নতুন পোশাক, মশারি, তেল, লোশনসহ অন্যান্য উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে মা ও নবজাতকের অবস্থা ভালো রয়েছে।

সুমন মিয়া ও জমিলা বেগমের বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে। জমিলার বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকায়। সন্তান জন্ম দিতে জগন্নাথপুর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে সুনামগঞ্জে আসেন সুমন মিয়া। তিনি একটি ভাড়া করা মাইক্রোবাসের চালক। এই দম্পতির আরেক ছেলে তাহসিন মিয়া রয়েছে।

আজ বিকেলে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বন্যার জন্ম হয়। এরপর তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রাতে ডেপুটি আবার তাকে দেখতে গেলেন। সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় জেলা প্রশাসক বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার ছেলের নাম রাখেন নূহ আলম প্লাবন।

সুমন মিয়া জানান, শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে রোববার বিকেলে নবজাতককে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি নিজেই তাদের ১০ হাজার টাকা উপহার দেন।

শনিবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। “ডিসি সাব যা করছেন তা আমরা কখনই ভুলব না,” তিনি বলেছিলেন। যে অবস্থায় ছিলাম সেই অবস্থায় থাকতে পারিনি। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নাম নিয়ে আমার ছেলে বড় হবে- এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। ‘

কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সুমন মিয়া। তিনি বলেন, আমি একজন গরিব মানুষ। আমার নিজের ভিটাও নেই। আমি অন্যের বাড়িতে থাকি। আমার মতো দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছি তা আমি সবসময় মনে রাখব। প্রধানমন্ত্রী নিজেই আমার ছেলের নাম রাখছেন, কত উপহার দিয়েছেন- এর চেয়ে সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে। ‘