খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমানই প্রধানমন্ত্রী হবেন: মির্জা ফখরুল
- আপডেট সময় ০৫:৩৯:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জুন ২০২২
- / ১১২৩ বার পড়া হয়েছে
বিএনপি ক্ষমতায় এলে সরকার প্রধান কে হবেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
বুধবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন। ২০ জুন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
আজ বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে সরকার প্রধান কে হবেন?
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমাদের বক্তব্য খুবই পরিষ্কার, হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগকে সরে যেতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার থাকলেই নির্বাচন হবে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে কে হবেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। তার অনুপস্থিতিতে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন। কোনো সংকট নেই। বিএনপির নেতৃত্বে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বরং তাদের সংকট আছে, হাসিনা ছাড়া কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেলে তারাই বলতে পারবে যুদ্ধ কাকে বলে। ‘
যারা ডুবতে চায় তাদের আমন্ত্রণে বিএনপি যেতে পারে না
পদ্মা সেতু উদ্বোধনে বিএনপি অংশ নেবে কি না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, যারা মানুষ হত্যা করে, যারা দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তুমুল জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে পদ্মায় ডুবিয়ে দিতে চায়; যারা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। দেশ ও দেশের জন্য যিনি সবচেয়ে বেশি সম্মান অর্জন করেছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওয়া প্রান্তে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৪ সালের মার্চে বিএনপি সরকারের সময় তিনি মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
জরিপের সারসংক্ষেপ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সেতুটির দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটার। প্রস্থ 25 মিটার। নদী শাসন 17.30 কিমি। এর নির্মাণ কাজ ২০০৬ সালের অক্টোবরে শুরু হয়ে ২০১৩ সালের মার্চে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। জরিপ অনুযায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৫৬ দশমিক ৬ কোটি টাকা। কিন্তু সময়ের অভাবে তা সম্ভব হয়নি, এটাই বাস্তবতা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কীভাবে বলতে পারেন যে, এত বড় জরিপ প্রতিবেদন সরকারিভাবে এখানে দেওয়ার পরও বিএনপি সরকার এসে তা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এই জরিপ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সময় নিয়ে কাজ করেছেন তারা। কিন্তু তিনি সমানভাবে বলছেন, বিএনপি সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। ‘
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “সমস্যাটা অন্য জায়গায় হয়েছে। সমস্যাটা হলো যখন বিশ্বব্যাংক কাজ শুরু করার পর ফান্ড বন্ধ করে দেয়, দুর্নীতির কথা বলে। তখন থেকেই সমস্যা শুরু হয়। এর জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন তিনি। ইউনূসকে দোষারোপ করেন। কোথায়? তিনি বুঝতে পেরেছেন…. আপনি কীভাবে দেখলেন যে বিএনপি বা ইউনূস দুর্নীতির কথা বলেছেন। তারপর তিনি কথা বলতে আসেননি। বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির কথা বলার পর আমরা দুর্নীতির কথা জানতে পারি।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেন ফখরুল। তিনি বলেন, আজ প্রমাণিত হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের নাগরিক নন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছেন, এটা মিথ্যা। আমরা আগেই বলেছি, তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। এতে দোষের কিছু নেই। তিনি কখনো ব্রিটিশ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেননি। এসব ফালতু কথা বলার কোনো কারণ নেই। আমিও অনেক ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি, কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। আমরা মনে করি না যে এটা রাজনৈতিক শালীনতার বিষয় হওয়া উচিত।
হেলিকপ্টারে দেখা গেলেও বন্যার্তদের কাছে যাননি
বন্যা কবলিত মানুষকে দেখতে সিলেট না যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গতকাল তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সিলেটে গিয়েছিলেন। সিলেটে গিয়ে হেলিকপ্টারে করে দেখেছি, খুব ভালো কথা। কিন্তু সার্কিট হাউসে গিয়েছিলেন, মিটিং করেছেন, কিন্তু একটু এগিয়ে গিয়ে বন্যার্তদের মাঝে যাননি। তিনি তাদের (বন্যা দুর্গতদের) একটুও সাহস দেখাননি। এ ছাড়া তিনি সিলেটের মেয়র আরিফ সাহেবকে বলেন, আপনাদের বিএনপি কোথায়, বিএনপি কত দিয়েছে। ‘
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এটা বিএনপির দায়িত্ব নয়