০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪

কলমাকান্দায় পানি রয়েছে, পানিতে আটকা পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৫৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
  • / ১৬৮০ বার পড়া হয়েছে

bdopennews

টানা বর্ষণে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে কলমাকান্দায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩৪৩টি গ্রামের মধ্যে তিন শতাধিক গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ প্রথম আলো</em>কে বলেন, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার মধ্যবর্তী কলমাকান্দায় আরও বন্যা হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তিন উপজেলার প্রচুর মানুষ জলাবদ্ধ। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত প্রতিটি উপজেলায় ২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, কলমাকান্দায় ইতোমধ্যে সাতটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবারসহ সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলা সদরের চানপুর, নদীপাড়, পশ্চিমবাজার, পূর্ববাজার ও কলেজ রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এখন হাঁটু পানি। মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর এখন প্লাবিত। উপজেলার সঙ্গে সব ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, চান্দুয়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তিন হাজারের বেশি মাছ। খাদ্য সংকটে পড়েছে গবাদি পশু।

কলমাকান্দা উপজেলার রডের সিমেন্ট ব্যবসায়ী প্রণয় তালুকদার বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে এসে দেখি ৪০০ বস্তা সিমেন্ট পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।উপজেলার বাসাউড়া গ্রামের বাসিন্দা ও কলমাকান্দা সরকারি কলেজের প্রভাষক রপন সাহা জানান, কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রামই প্লাবিত হয়েছে।উপজেলার ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষের মধ্যে অধিকাংশই পানিবন্দি। জলাবদ্ধতা।পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।পানি বাড়ছে, মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নেত্রকোনার কংস, মোমেশ্বরী, ধনু ও উবদাখালীসহ সব নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উবদাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপরে। তখন বিপদের মাত্রা ৮.৫৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ছিল ৯৫ মিলিমিটার।

কলমাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, কলমাকান্দার সব এলাকায় এখন বন্যার পানি। অবস্থা তেমন ভালো নয়, ইউএনও কার্যালয়, উপজেলা পরিষদসহ নগরীর হাঁটু গেড়ে বসে আছে। মানুষের আশ্রয় নেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে

নিউজটি শেয়ার করুন

কলমাকান্দায় পানি রয়েছে, পানিতে আটকা পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ

আপডেট সময় ০৪:৫৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

টানা বর্ষণে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে কলমাকান্দায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩৪৩টি গ্রামের মধ্যে তিন শতাধিক গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ প্রথম আলো</em>কে বলেন, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টা উপজেলার মধ্যবর্তী কলমাকান্দায় আরও বন্যা হচ্ছে। অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তিন উপজেলার প্রচুর মানুষ জলাবদ্ধ। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত প্রতিটি উপজেলায় ২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, কলমাকান্দায় ইতোমধ্যে সাতটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবারসহ সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলা সদরের চানপুর, নদীপাড়, পশ্চিমবাজার, পূর্ববাজার ও কলেজ রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এখন হাঁটু পানি। মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর এখন প্লাবিত। উপজেলার সঙ্গে সব ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কলমাকান্দা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, চান্দুয়াই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তিন হাজারের বেশি মাছ। খাদ্য সংকটে পড়েছে গবাদি পশু।

কলমাকান্দা উপজেলার রডের সিমেন্ট ব্যবসায়ী প্রণয় তালুকদার বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে এসে দেখি ৪০০ বস্তা সিমেন্ট পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।উপজেলার বাসাউড়া গ্রামের বাসিন্দা ও কলমাকান্দা সরকারি কলেজের প্রভাষক রপন সাহা জানান, কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রামই প্লাবিত হয়েছে।উপজেলার ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষের মধ্যে অধিকাংশই পানিবন্দি। জলাবদ্ধতা।পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।পানি বাড়ছে, মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নেত্রকোনার কংস, মোমেশ্বরী, ধনু ও উবদাখালীসহ সব নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উবদাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপরে। তখন বিপদের মাত্রা ৮.৫৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত ছিল ৯৫ মিলিমিটার।

কলমাকান্দা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, কলমাকান্দার সব এলাকায় এখন বন্যার পানি। অবস্থা তেমন ভালো নয়, ইউএনও কার্যালয়, উপজেলা পরিষদসহ নগরীর হাঁটু গেড়ে বসে আছে। মানুষের আশ্রয় নেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে