ওসি প্রদীপ ২০ বছর, স্ত্রী চুমকির ২১ বছরের কারাদণ্ড

- আপডেট সময় ০৬:২৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
- / ৫৩৫ বার পড়া হয়েছে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকি চারার ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বিডি ওপেন নিউজ কে বলেন, আদালত প্রদীপকে ২০ বছর এবং তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের পক্ষে বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণা দেয় আদালত। রায় ঘোষণার সময় প্রদীপ ও চুমকি উভয়েই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রদীপ ও চুমকিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয়। পরে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত জানান, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। গত বছরের ২৬ জুলাই প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। প্রদীপের স্ত্রী চুমকি পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে একটি বাড়ি, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, একটি গাড়ি ও একটি মাইক্রোবাস, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও কক্সবাজারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক বলে জানা গেছে। তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় রয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী বলে দাবি করলেও তার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সম্পদ ঘোষণায় চুমকি ২০০২ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বোয়ালখালীর খামারের মাছ ব্যবসা থেকে দেড় কোটি টাকা আয় দেখিয়েছেন। কিন্তু আয়কর রিটার্নে তা উল্লেখ নেই। চুমকি দেখিয়ে নকল মাছের ব্যবসা করে।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত বছরের ২৯ জুন প্রদীপের স্ত্রীর নামে গাড়ি, বাড়ি ও ব্যাংক হিসাব রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে রাখার নির্দেশ দেন। একই বছরের ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হয়। 29 জনের মধ্যে 24 জনকে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ জুলাই যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১শে জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান এই হত্যা মামলায় প্রদীপসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ রায় দেন।