এক লাখ টাকার সুদ-আসলে সাড়ে ছয় লাখ টাকা দাবি, যুবকের আত্মহত্যা
- আপডেট সময় ০৩:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ অগাস্ট ২০২২
- / ১০২০ বার পড়া হয়েছে
সুনামগঞ্জে ব্যবসা করার জন্য এক সুদ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে আসেন। তিন বছর আগের কথা। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীকে সাড়ে তিন লাখ সুদ দেন। কিন্তু বেশি টাকা চাওয়ার চাপে ওই ব্যক্তি ফেসবুকে সুইসাইড নোট পোস্ট করে আত্মহত্যা করেন। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পাতারী গ্রামে। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের একটি বটগাছের সঙ্গে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের নাম ফয়সাল আহমেদ সৌরভ (২৫)। এর আগে তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে নিজের মৃত্যুর জন্য দুজনকে দায়ী করেন। ফয়সাল আহমদের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা বালিজুরী ইউনিয়নের পাতারী গ্রামে। তার স্ত্রী ও চার মাসের একটি মেয়ে রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফয়সাল তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘তোমার গলায় দড়ি দিলাম, তুমি রফিকের লাগি। তুমি আমাকে পরাভূত করে লাশে পরিণত করেছ। নিরাপদে থাকুন বেইমান। সফিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা সুদ পাচ্ছিলাম, তিন লাখ টাকা দেওয়ার পরও সাড়ে তিন লাখ টাকা পেয়েছেন। এই রফিক আর সফিকের জন্যই আমি আত্মহত্যা করেছি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ফয়সাল আহমদ বালু ও পাথরের ব্যবসা করতেন। তিন বছর আগে উপজেলার একই ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রামের শফিক মিয়া (৩৮) সুদ হিসেবে এক লাখ টাকা নিয়ে আসেন। এ পর্যন্ত তিন লাখ টাকা দিয়েছেন। সফিকের দাবি, তাকে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে হবে। এ জন্য তিনি ফয়সালকে চাপ দিচ্ছিলেন। রফিক মিয়ার (৪৫) বাড়ি একই উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে। তার সঙ্গে ফয়সালের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। গতকাল সফিক ও রফিক কয়েকজন মিলে ফয়সালকে টাকার জন্য চাপ দেয়। এ সময় তারা তাকে গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে রফিক মিয়া ফয়সালের একটি পাথর বোঝাই নৌকা আটকে দেন। সন্ধ্যায় তার ফেসবুক পোস্ট দেখে সবাই ফয়সালকে খুঁজতে থাকে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রামের পশ্চিম পাশে একটি বটগাছে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
ফয়সালের বাবা আজিজুর রহমান বলেন, এক লাখ টাকার বিনিময়ে তিন লাখ টাকা দেওয়ার পরও ফয়সালকে টাকার জন্য চাপ দিত সফিক। নানাভাবে হুমকি দেয়। সফিক ও রফিকের চাপে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।
এ বিষয়ে কথা বলতে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সফিক মিয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে সফিক ও রফিক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী নেওয়াজ বলেন, ফয়সাল খুব ভালো ছেলে ছিল। টাকার কথা পরিবারকে জানাননি। টাকার চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
তাহিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা প্রথমে জানান, ফয়সাল আহমেদের পরিবার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাশের পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হয়েছে।